মধ্যযুগে ভারতবর্ষে মুসলিম শাসকদের হিন্দুদের উপর অমানবিক অত্যাচার!
মধ্যযুগীয় মুসলিম শাসকরা হিন্দুদের প্রতি কতটা উদার ছিলেন?
Like Our Page
https://www.facebook.com/history990
সম্রাট_শাহজাহান_সম্পর্কে_কিছু_না_জানা_কথাঃ
সম্রাট শাহজাহান প্রায়ই অন্যান্য ধর্মের সাধুসন্তদের ধর্মালোচনা করার নাম করে আগ্রায় ডেকে আনতেন। শাহজাহানের ধর্মনিরপেক্ষতার ফাঁদে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁদের মুসলমান হওয়ার হুকুম দিতেন। যাঁরা ঐ হুকুম মেনে নিয়ে মুসলমান হতেন তাঁরা বেঁচে যেতেন। বাকিদের পরদিন সকালে নানাপ্রকার পৈশাচিক অত্যাচার করে হত্যা করা হত। সবচেয়ে বেশী অবাধ্যদের হাতির পায়ের তলায় পিষে মারা হত। [তথ্যসূত্র- Trans-Arc. Soc. Agra. 1978. Jan-June, VIII-IX]
ঐতিহাসিক Keene লিখেছেন, "একবার শাহজাহান ফতেপুর সিক্রী অবরোধ করার সময় নির্মম অত্যাচার করে হিন্দু প্রজাদের যথাসর্বস্ব লুঠ করেন এবং অভিজাত হিন্দু রমণীদের ধর্ষণ করার পর তাঁদের স্তন কেটে ফেলেন।"
ইতিহাস লেখক আবদুল হামিদ লাহোরী তাঁর রচনা বাদশাহনামায় লিখেছেন, "একদা বাদশাহের গোচরে আনা হল যে, তাঁর পিতার (জাহাঙ্গীরের) আমলে বিধর্মী কাফেরদের শক্ত ঘাঁটি বারাণসীতে অনেক পুতুল পুজার মন্দির তৈরী করা শুরু হয়েছিল যা শেষ পর্যন্ত অসমাপ্ত থেকে যায়। বর্তমানে কাফেরের দল সেই সব মন্দির তৈরীর কাজ সম্পূর্ণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই কথা শুনে ধর্মের রক্ষক মহানুভব সম্রাট আদেশ জারী করলেন যে বারাণসী সহ তাঁর রাজ্যের যেখানে যেখানে অসম্পূর্ণ মন্দির খাড়া করা হয়েছে তার সবগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। অধুনা খবর এসেছে যে তাঁর আদেশ বলে এলাহাবাদ প্রদেশের বারাণসী জেলায় ৭৬ টি মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছে।"
ঐতিহাসিক শ্রী কানোয়ার লালের মতে, "শাহজাহান ছিলেন একজন গোঁড়া সুন্নী মুসলমান। তাঁর পত্নী মমতাজ মহলের পরামর্শে তিনি নতুন করে হিন্দু মন্দিরগুলি ভাঙার কাজ শুরু করেছিলেন। মুসলমান হিসাবে শাহজাহান যে কতখানি উগ্র ও গোঁড়া ছিলেন তা একটি ঘটনার মধ্যে দিয়ে ভালভাবে বোঝা যাবে। ১৬৩২ সালে কাশ্মীর থেকে ফেরার পথে সম্রাটের নজরে আনা হল যে রাজৌরী, ভিম্বার, পশ্চিম পাঞ্জাব সহ গুজরাটের কিছু কিছু স্থানে হিন্দুরা নব্য মুসলমান মহিলাদের অর্থাৎ বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হওয়া হিন্দু মহিলাদের পত্নীরূপে গ্রহণ করেছে। এবং বিবাহ করার পর সেই সব মুসলমান মহিলাদের আবার হিন্দু করেছে। এই কথা শুনে সম্রাটের ভীষণ ক্রোধ উপস্থিত হল। সম্রাটের আদেশে সেই সকল হিন্দুদেরও ধরে আনা হল এবং বিরাট অঙ্কের টাকা জরিমানা ধার্য করা হল। এত বেশী অর্থ জরিমানা করা হল যাতে কেউ তা দিতে না পারে। তারা অক্ষমতা জানালে তাদের বলা হল যে একমাত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেই তাদের মুক্তি দেওয়া হবে, অন্যথায় তাদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ঔকরা হবে। তারা সকলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে অস্বীকার জানালে তাদের সবাইকে হত্যা করা হল এবং তাদের ৪৫০০ বিবাহিতা মহিলাদের পুনরায় জবরদস্তি মুসলমান করা হল। [তথ্যসূত্র- R.C.Majumder. BVB, Vol. VII. P-312]
শাহী_রাজবংশ
১৩৬০ সালে ফিরোজ-শাহ-তুঘলক ওড়িষ্যা আক্রমণ করে...পুরী শহর সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেয় ও লুন্ঠন করে হিন্দুদের সব সম্পত্তি!জ
জগন্নাথের মন্দির ভেঙে অপবিত্র করে এবং জগন্নাথের বিগ্রহ ভেঙে সমুদ্রে ফেলে দেয়! তখন ওড়িষ্যার রাজধানী ছিল জাজনগর...সেখানে এসে ফিরোজ শাহ জানতে পারলো যে, সেখানকার অধিবাসীরা ভয়ে সমুদ্রের তীরবর্তী একটি দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছে! ফিরোজ শাহ তার জেহাদি সৈন্য নিয়ে সেই দ্বীপে পৌঁছে গেল এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া ১,২০,০০০ হিন্দুকে একদিনের মধ্যে কোতল করে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিল!
ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারনি এই হিংস্র জেহাদি কার্যকলাপ বর্ননা করতে গিয়ে তারিজ-ই ফিরোজশাহীতে লিখছে :- জোর করে তুলে আনা হিন্দু রমনীতে পরিপূর্ন হারেমে একবার ঢু মারা ছিল ফিরোজ শাহের নিত্যকর্ম!
এছাড়াও আর একটি বর্ননাতে বলছেন.... ফিরোজ শাহ শুধু হিন্দু মেয়েদের বলাৎকার করেই খুশি হত না,,তাদের উপর নরকীয় পাশবিক অত্যাচার করেই সে বেশী আনন্দ পেত! এই সব অত্যাচারের মধ্যে ছিল۔۔۔ যোনিদ্বারে গরম লোহা ঢুকিয়ে দেওয়া,, যোনিদ্বার সেলাই করে বন্ধ করে দেওয়া অথবা স্তন কেটে ফেলা ইত্যাদি! [[ তথ্য:- তাজরিয়াৎ আসর quoted by S.sen in Jihad in India,,p-26 ]]
১৩৮৮ সালে মহম্মদ-বিন-তুঘলকের মৃত্যুর পর তার খুড়তুতো ভাই ফিরোজ-শাহ-তুঘলক দিল্লির সিংহাসনে বসে!
তারপর হিন্দুদের উপর শুরু হয় আরও অত্যাচার! কাশী আক্রমণ করে 20 হাজার হিন্দু হত্যা করে... মগথ, বারনিবার, কাঞ্চী আক্রমণ করে বহু হিন্দু হত্যা করে ও তাদের সম্পত্তি লুটপাট করে এবং ৩০ হাজার কাফের পুরুষ ও ৩ হাজার হিন্দু রমনি বন্দী বানিয়ে দিল্লি নিয়ে আসে!জেহাদি সৈন্যদের মধ্যে গনিতমাল হিসাবে বিলিয়ে দেয় হিন্দু রমনিদের! আর পুরুষদের ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করা হয়!
সম্রাট_আকবর_তথা_মুঘল_আমল
ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথের মতে আকবরের হারেমে মোট ৫০০০ রমণী ছিল। পিতার মৃত্যুর পর বাদশাহ হয়ে জাহাঙ্গীর ঐ হারেমের মালিক হন এবং রমণীর সংখ্যা আরও ১০০০ বাড়িয়ে মোট ৬০০০ করেন। হিন্দু পরিবারের মেয়েদের ধরে এনে এনে ওই অভিশপ্ত হারেমে যৌনদাসী বানিয়ে রাখা হত।
কারন ইসলামের নিয়ম হল:
১। হানা দিয়ে সকল কাফের বা বিধর্মী পুরুষকে হত্যা করতে হবে।
২। যুদ্ধবন্দী নারী ও শিশুদের গণিমতের মাল হিসেবে ভাগ বাঁটোয়ারা করে নিতে হবে। তারপর পছন্দ মতো ভোগ করতে হবে বা বিক্রি করে দিতে হবে।
৩। অমুসলমানের সমস্ত সম্পত্তি, নারী ও শিশু সমেত গণিমতের মাল। সুতরাং তা ভোগ দখল করতে হবে।
১৫৫৬ খৃষ্টাব্দে পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে ভাগ্যের পরিহাসে হিন্দু বীর বিক্রমাদিত্য হোমরাজ ওরফে হিমু বিজয়ের দোরগোড়ায় পৌছেও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হলেন। অতিশয় রক্তক্ষরনে মৃতপ্রায় সম্রাট হোমরাজকে বৈরাম খা হাত পা বাধা অবস্থায় আকবরের সামনে উপস্থিত করল। এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে সমকালীন মুসলমান ঐতিহাসিক আহম্মদ ইয়াদ্গার তারিখ–ই–আফগানা গ্রন্থে লিখেছেন– সম্রাট হোমরাজকে ঐভাবে হাত পা বাধা অবস্থায় আকবরের সামনে উপস্থিত করে বৈরাম খা বলল– আজ প্রথম সাফল্যের এই শুভ মুহূর্তে আমাদের ইচ্ছা সম্রাটের মহান হস্ত তরবারির সাহায্যে এই বিধর্মী কাফেরের মস্তক ছিন্ন করুক। সেই অনুসারে সম্রাট তার মস্তক অপবিত্র দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করলেন। [Elliot & J.Dowson, V,pp-65-66]
১৫৬৭ খৃষ্টাব্দে আকবর মেবারের রাণা উদয় সিংহের বিরুদ্ধে অভিযান করেন এবং চিতোর দূর্গ অবরোধ করে দূর্গের দেওয়ালের নিকট বারূদ জমা করে প্রবল বিষ্ফোরণ ঘটানো হল। এতে প্রচীরের অংশ বিশেষ ধ্বংস হয়ে গেল। দূর্গ রক্ষার আর কোন উপায় না দেখে সেদিনই রাজপুত নারীরা জহর ব্রত অনুষ্টান করলেন। প্রায় ৩০০ রাজপুত নারী জ্বলন্ত আগুনে আত্মাহুতি দিলেন। দূর্গের মধ্যে তখন মাত্র ৮০০০ রাজপুত সৈন্য অবশিষ্ট ছিল। তারা প্রবল বিক্রমে যুদ্দ করে সকলেই প্রাণ দিলেন। সব মিটে গেলে পরদিন সকালে বিজয়ী আকবর হাতিতে চড়ে দূর্গে প্রবেশ করলেন। তখন দূর্গের মধ্যে ছিল ৪০ হাজার অসামরিক প্রজা। আশ্রয় নেওয়া ৪০ হাজার রাজপুত কৃষক প্রজার ভাগ্যে কি ঘটলো?
ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ লিখেছেন—
‘দূর্গ অবরোধের সময় ঐ ৪০ হাজার (অসামরিক)কৃষক প্রজা রাজপুত বাহিনীর ৮০০০ সৈন্যকে যথাসাধ্য সাহায্য করেছিলেন। সে কারনে সম্রাট তাদের হত্যার আদেশ দিলেন। ফলে সেদিন ৪০ হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছিল।
ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার লিখেছেন, সেদিন কত রাজপুত মারা পড়েছিল তার সঠিক সংখ্যা পাওয়া সম্ভব নয়। আবুল ফজল যে ৩০ হাজার সংখ্যা বলেছেন তা তো শোনা কথা, দেখা নয়, প্রকৃত সংখ্যা ৫০ হাজার, ৮০ হাজার, এক লাখ বা তারও বেশি হওয়া বিচিত্র নয়।
সব থেকে মজার ব্যপার হল, এই ঘটনার শেষাংশ আমাদের সকল ঐতিহাসিকই সযত্নে এড়িয়ে গেছেন। কত রাজপুত সেদিন মারা পড়েছিল তা জানতে সম্রাটের খুব ইচ্ছা হয়। কিন্তু অত মৃতদেহ গুনবে কে? শেষে সম্রাটের আদেশে সব মৃত দেহের পৈতা খুলে আনা হল এবং দাড়িপাল্লায় ওজন করা হলে মোট ওজন দাড়ালো সাড়ে চুয়াত্তর মণ।
ভিনসেন্ট স্মিথ লিখেছেন“The recorded amount was 74.50 mans of about eight ounce each. (V.A. Smith, ibid-91)”
কাজেই প্রতিটি পৈতার ওজন ৮ আউন্স হলে কত হাজার বা কত লক্ষ পৈতা জড়ো করলে সাড়ে চুয়াত্তর মণ হয় তা অনুমান করা কঠিন কাজ নয়। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে মহিলা ও শিশু, যাদের পৈতা ছিল না। পরবর্তী কালে সম্রাট আওরঙ্গজেব হুকুম জারী করেন যে, প্রত্যেক দিন এমন সংখ্যক হিন্দু হত্যা করতে হবে যাতে তাদের পৈতা জড়ো করলে সোয়া এক মণ হয় এবং এই পরিমাণ পৈতা এনে রোজ তাকে দেখাতে হবে। উত্তর ভারতে প্রতিটি পৈতার ওজন তিন আউন্স। সে হিসেবে প্রতিদিন ২৪ হাজার হিন্দু হত্যা করা হত।
অথচ আমরা আজকে যে ইতিহাস পড়ি সেখানে এই মুঘল আমলকেই স্বর্নযুগ হিসাবে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু কেন?
“যদি কোনো গবেষক উপরোক্ত তথ্যাবলীর মধ্যে একটিও ভূল বলে প্রমান করতে পারেন, তাহলে তার কাছে চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞ থাকব।“
Writer: Satanando Ray
এমন আরো তথ্য জানতে Bengal Hindu এর সাথেই থাকুন।
এছাড়া আমাদের অনুপ্রানিত করার জন্য দয়াকরে নিচের এই "ads" এ একটি ক্লিক করে দিবেন।