Translate

অগস্ত্য সংহিতা ও বিদ্যুৎ নির্মাণ কৌশল - প্রাচীন ব্যাটারি || Agastya Samhita and power generation techniques


আধুনিক বিজ্ঞান ও আধুনিক সভ্যতার প্রাণভোমরা হল বিদ্যুৎ বা ইলেকট্রিসিটি। বিদ্যুৎ ছাড়া বর্তমান বিজ্ঞান ও সভ্যতা এক ইঞ্চিও চলতে পারে না। আধুনিক বিজ্ঞানের ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি, ১৭৭৫ খ্রীঃ, সর্বপ্রথম ইতালীয় বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো ভোল্টা একটি আধারে বিদ্যুৎ তৈরী করেন। বিজ্ঞানী ভোল্টা একটি তড়িৎ কোষ আবিষ্কারের মাধ্যমে বিশ্ববিখ্যাত হয়ে ওঠেন। এই তড়িৎ কোষ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, যাকে চলতি কথায় আমরা 'ব্যাটারি' বলে থাকি।


সুতরাং আধুনিক বিজ্ঞানের ইতিহাসে, প্রায় ২৫০ বছর আগে বিজ্ঞানী ভোল্টা সর্বপ্রথম ব্যাটারি আবিষ্কারের কৃতিত্ব অর্জন করলেও, আশ্চর্যের বিষয় এই যে, হাজার হাজার বছর আগে বৈদিক যুগের ভারতীয়রা এই ব্যাটারি বা বিদ্যুৎ নির্মাণ কৌশল জানত। একথা ভাবতে বিস্ময় লাগলেও, এটাই সত্য। সুপ্রাচীন বৈদিক সাহিত্যের অন্তর্গত 'অগস্ত্য সংহিতা' নামক গ্রন্থের শ্লোকে ব্যাটারি বা বিদ্যুৎ নির্মাণের কৌশল বলা আছে। আসুন দেখা যাক, 'অগস্ত্য সংহিতা'র শ্লোকে কি বলা রয়েছে--


অগস্ত্য সংহিতা গ্রন্থের রচয়িতা হলেন বৈদিক যুগের অন্যতম বিখ্যাত চরিত্র ঋষি অগস্ত্য। এটি 'পঞ্চরাত্র রচনাসমূহ' -এর অন্তর্গত একটি গ্রন্থ, যা বর্তমান সময় থেকে কয়েক হাজার বছর আগে রচিত হয়েছিল। অগস্ত্য সংহিতার পান্ডুলিপি বর্তমানে ভারতের উজ্জয়নের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে।


অগস্ত্য সংহিতায় যে শ্লোকের মাধ্যমে ব্যাটারি বা বিদ্যুৎ নির্মাণ কৌশল বলা আছে, তা হল ---

"সংস্থাপ্য মৃন্ময়ে পাত্রে তাম্র পত্র সুশোভিতম্।

ছাদয়ে চ্ছিখিগ্রিবেন চাদ্রীভঃ কাষ্টপাসুভিঃ।।

দস্তালোষ্ঠো নধিতাব্যঃ পারদাচ্ছাদিতস্ততঃ।

সংযোগান্নায়তে তেজো মৈত্রবরুণা সংজ্ঞিতম্।।"

(অগস্ত্য সংহিতা)


অর্থাৎ -- একটি মাটির পাত্রে তামার পাত লাগাতে হবে। কয়লার গুঁড়ো ও ভিজে কাঠের গুঁড়ো দিয়ে পাত্রটি ভরতে হবে। এরপর এরমধ্যে জিঙ্ক বা দস্তা পাউডারের মন্ড দিয়ে তাকে পারদ দিয়ে বন্ধ করতে হবে। এর ফলে পাত্রমধ্যস্থ পদার্থগুলোর মধ্যে আভ্যন্তরীন বিক্রিয়ায় 'মিত্র' ও 'বরুণ' নামের দুটো তেজ উৎপন্ন হবে। এখানে 'মিত্র' অর্থাৎ পজেটিভ চার্জ ও 'বরুন' অর্থাৎ নেগেটিভ চার্জ এবং তেজ অর্থাৎ ইলেকট্রিক চার্জের কথা বলা হয়েছে।

তাহলে দেখা গেল, আধুনিক বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিজ্ঞানী ভোল্টার ব্যবহৃত ব্যাটারি বা বিদ্যুৎ নির্মাণ পদ্ধতির কথা সুপ্রাচীন বৈদিক সাহিত্যের 'অগস্ত্য সংহিতা'য় হাজার হাজার বছর আগেই, প্রায় একই ভাবে উল্লেখ রয়েছে।

প্রফেসর P. P. Hole, ১৯৯০ এর দশকে অগস্ত্য সংহিতাতে বর্নিত শ্লোক অনুসারে একটি তড়িৎ কোষ বা ব্যাটারি নির্মাণ করেন। সম্প্রতি দিল্লির 'সংস্কৃত ভারতী' নামের একটি প্রকাশনা সংস্থা 'দ্য ফিজিক্স' নামের একটি বই প্রকাশ করেছে। বইটির লেখক হলেন ডঃ এন. জি. ডঙ্গরে। এই বইটিতে অগস্ত্য সংহিতার এই বিদ্যুৎ নির্মাণ কৌশলটি বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।



ভালো লাগলে আমাদের সাইটটি ফলো করবেন এবং শেয়ার করবেন।

PROMOTE by MOVIES XXYZ

Click And Donation

Our Telegram Channel



TAGS:

vedas
atharva
rigveda
yajurveda
4 vedas
sama veda
ayur vedaTAGS:
বেদ
hindus
hindu god
hindu books
hindu god images
Next Post Previous Post
1 Comments
  • Journalist
    Journalist ৯:৫০ PM

    এমন পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে ফলো,কমেন্ট ও শেয়ার করবেন। এতে করে আমরা অনুপ্রেরনা পাই ◀️।

Add Comment
comment url