বাংলা নববর্ষ তন্ত্রধর্মীয় প্রকৃতি উপাসনার শেকড়ে সম্পৃক্ত
শুভ নববর্ষ ১৪২৯🎉
বেঙ্গল হিন্দু সাইটের সঙ্গে যুক্ত সহযোদ্ধা, শুভানুধ্যায়ী ও পাঠক - সবাইকে জানাই ১৪২৯ বঙ্গাব্দের প্রীতি, নমস্কার, অভিবাদন, প্রণাম, ভালোবাসা, আশিস ও শুভেচ্ছা।
বাংলা নববর্ষ আমাদের তন্ত্রধর্মীয় প্রকৃতি উপাসনার শেকড়ে সম্পৃক্ত। এই নববর্ষ একান্তভাবে তান্ত্রিক। যদিও গুপ্তযুগেই লকুলীশ "শিব" ও তাঁর অনুগামীদের উদ্যোগে শৈব ধর্ম ব্যাপকভাবে প্রকৃতি ও তন্ত্রের আশ্রয় নিতে শুরু করে বলে অনুমান, তবে জয়নাগ-শশাঙ্ক যুগে শিব ও নীলাবতীর বিবাহ উৎসব উপলক্ষে এই নববর্ষবরণ, এই বৈশাখী নববর্ষ উদযাপন শুরু হয়। মধ্যযুগে চৈতন্য নিত্যানন্দের আন্দোলন যে নবজাগরণ এনেছিল তার একটি সুফল এই যে অন্তর্লীন ফল্গুধারা হয়ে বয়ে চলা তন্ত্রধর্মীয় এই নববর্ষের উদযাপন এবং এই বঙ্গাব্দের উদযাপন বাঙালি জাতির মধ্যে ব্যাপক আকারে প্ৰচলিত হয়।
ধর্ম ব্যতীত কোনও বৃহৎ সম্প্রদায় নির্মাণ অসম্ভব। আমাদের ধর্ম আমাদের জাতিকে ধারণ করে আছে। বাঙালির একমাত্র সংজ্ঞা ধর্মীয়, তন্ত্রধর্মীয়। আমাদের একমাত্র উপাস্য প্রকৃতিমাতৃকা। বিশ্বমানব, গোবলয় ও ইসলামিক বলয়ের সমস্ত বিজাতীয় কায়েমী স্বার্থকে ধ্বংস করে এই নতুন বছরে ইতিহাসবিস্মৃত শেকড়বিচ্ছিন্ন বাঙালি জাতিকে তার আত্মপরিচয়ের স্বরূপটি চেনানোর শপথ নিন।
হ্যাঁ, কারা যেন বলে বেড়াচ্ছিল, পয়লা বৈশাখের কোনও ধর্ম হয় না? সেই সব আওয়ামি ভাষাবাদীদের গিয়ে বলে আসুন, আমরা এই উৎসবটিকে বাঙালির শেকড়ে থাকা তন্ত্রধর্মীয় উৎসব বলে প্রমাণ করেছি। গত বছর পয়লা বৈশাখে আমার লেখা "বঙ্গাব্দের উৎস" শীর্ষক প্রবন্ধটি দ্রষ্টব্য।আমাদের প্রকৃতিমাতৃকার লজ্জাগৌরী রূপের যে মঙ্গল স্বস্তিকা চিহ্ন আজ আমরা সর্বত্র এঁকে দেব, তাঁর আশীর্বাদ আমাদের জাতির ওপরে বর্ষিত হোক এবং তিনি অসীম ক্ষুধায় বাঙালির সমস্ত অন্তর্ঘাতক ও বহিরাগত শত্রুদের ভক্ষণ করুন। আজ নববর্ষ, আজ শত্রুরা আমাদের মায়ের মহাপ্রসাদ হোক।
পালযুগের বৃহৎ বঙ্গের বিহারে একাদশ শতকে উৎকীর্ণ উমা মহেশ্বর মূর্তি। শিব ও নীলাবতী, পুরুষ ও নারীর বিবাহের মাধ্যমে সৃষ্টি নতুন করে নির্মিত হয়, তন্ত্রে এই মিলনের উদযাপন ঘটে, তাই বাংলা নববর্ষ এই তন্ত্রধর্মীয় জাতির উপযুক্ত উৎসব।
https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95