ফেসবুকে ধর্ম বা নবীর অবমাননার গুজব তুলে বারবার সাম্প্রদায়িক হামলা, কৌশল একই - Sojasapta2
ফেসবুকে ধর্ম বা নবীর অবমাননার গুজব তুলে বারবার সাম্প্রদায়িক হামলা, কৌশল একই
ইদানিং বাংলাদেশে কতিপয় ইসলাম ধর্মপ্রাণ মানুষের আয়-রোজগারের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজব রটিয়ে দিয়ে হিন্দুদের বাড়িঘর ও দোকানপাট লুটতরাজ করা। এই সুযোগে হিন্দু নারীদের উপর বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থ করা এবং সহজাত পৌত্তলিকতা বিদ্বেষ থেকে হিন্দু মন্দিরগুলোর বিগ্রহ ভাঙচুর করা। বিগত এক দশক ধরে এরকম ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলছে। অথচ বাংলাদেশের মিডিয়া, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির হট্টগোল চালিয়ে হিন্দু নির্যাতন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুনঃ
শত্রু সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দুদের জমিজমা সব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিএনপির আমলে হিন্দুদের পক্ষে চাকরি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন ছিল। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হিন্দুরা যোগ্যতাবলে কিছু চাকরি পাচ্ছে ঠিকই। তাও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, সরকারি চাকরির 30 শতাংশ দখল করে আছে নাকি হিন্দুরা। অথচ একটি জাতীয় পত্রিকা জরিপ চালিয়ে জানিয়েছে: হিন্দু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই পার্সেন্ট।
এবার নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার হিন্দুদের টার্গেট করা হয়েছে।
কারণ এই দুই জেলায় এখনো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হিন্দুর বসবাস। নড়াইলের দিঘলিয়া বাজারে সাহা পদবীর হিন্দু ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য। দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ফেসবুক পেজে দেখলাম সেখানে কমেন্ট করা হয়েছে, "সাহা শুঁড়ি ব্যবসায়ীদের দমন করা নাকি ঈমানী দায়িত্ব"। এছাড়া বিভিন্ন উগ্র সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা তো রয়েছেই।
এই নড়াইলেই মাত্র কয়েক দিন আগে একজন হিন্দু কলেজ অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে মর্মান্তিক ভাবে অপমান করা হয়েছে। বাগেরহাটে একটি হিন্দু মেয়েকে কলেজ থেকে তুলে নেওয়ার জন্য, ধর্ম অবমাননার মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে দিয়ে বীভৎস তাণ্ডবলীলা চালানো হয়েছে। এছাড়াও বাগেরহাটে ধর্ম অবমাননার কাল্পনিক অভিযোগ তুলে পরপর বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
আমরা বাংলাদেশের দেড় কোটি সংখ্যালঘু হিন্দু।
এই গুরুতর সাম্প্রদায়িক সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। আমরা বাংলাদেশে টিকে থাকতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আবেদন জানাচ্ছিঃ আপনি 'মদিনা সনদ' অনুযায়ী দেশ চালানোর কথা বলেছেন। তাই প্রয়োজনে আমাদের কাছ থেকে জিজিয়া কর নিন, বিনিময়ে আমাদের শান্তিতে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিন। আপনি আমাদের শেষ ভরসার জায়গা। কারণ বিএনপি যদি ক্ষমতায় ফিরে আসে, হিন্দুদের বাংলাদেশে বসবাস করতে দেবে না।