বাংলাদেশে ওয়াজ মাহফিলে হিন্দু ধর্মের অপমান করা হয়। এর সত্যতা কতটুকু?
কিছু কিছু হিন্দুকে (বাংলাদেশি বা ভারতীয়) বলতে শুনেছি যে বাংলাদেশে যেসব ওয়াজ মাহফিল হয় তাতে নাকি হিন্দু ধর্মের অপমান করা হয়। তো এই কথাটার সত্যতা কতটুকু? এর কোনো উদাহরণ দেখাতে পারবেন কি?
হ্যা, আমি আপনাকে নিশ্চিত করছি এই কথার সত্যতা ১০০%।
ওয়াজ মাহফিলের সাধারণত একটা ফরম্যাট হয়ঃ
- আদি পর্বঃ মাহফিল শুরু হয় ইসলামী কিছু প্রবচন দিয়ে
- ক্রন্দন পর্বঃ তার পরে শুরু হয় সারা বিশ্বে নিরীহ মুসলমানরা কিভাবে প্রতিদিন নির্যাতিত হচ্ছে ( উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে থাকে ১) ফিলিস্তিন ২) কাশ্মীর ৩) আমেরিকা কিভাবে মুসলমানদের ধ্বংস করছে ৪) কেন জানিনা উইঘুর-চীন নিয়ে খুব বেশী কথা শুনি নাই
- উত্তেজনা পর্বঃ ১) ফিলিস্তিন ২) কাশ্মীর ৩) আমেরিকা যেহেতু উদাহরণে আসে, তাই এইবার মাহফিলে স্বভাবতই আসে ইহুদী-নাসারা-কাফের-ভারত (হিন্দু) গালি গালাজের মাধ্যমে তৌহিদ জনতাদের উত্তেজিত করা। পৌত্তলিক দের সঙ্গে সব চেয়ে বেশী সামঞ্জস্য হিন্দুদের উপাসনা হওয়াতে প্রবচন ফ্লো চালাতে সুবিধা হয়। ইদানীং এই পর্বে নাস্তিক নামের একটি উপপর্ব যুক্ত হয়েছে।
- মূল পর্বঃ এস্থলে কোরআন-হাদীস থেকে সংক্ষিপ্ত জ্ঞান-গর্ভ আলোচনা হয়, তবে যেহেতু মাহফিল গভীর রাতে হয়, আর শ্রমক্লান্ত আম-জনতার মস্তিষ্ক মাঝরাতে এই জ্ঞানের কথায় ঘুমিয়ে পরে শুরু হয়
- লালসা পর্বঃ এইবার মুসলমান হলে আখেরাতে কি পাওয়া যাবে, হুর দের শারীরিক সৌষ্ঠব্য, রসূলের জীবনী বর্ণনা...
- নও মুসলিম পর্বঃ এইখানে ধন্মান্তরিত মুসলমানদের মুসলিম জাহানের সাথে পরিচয় করে দেয়া হয়। তার জন্য থাকে আর্থিক অনুদান, মাহফিল ভেদে ১ লক্ষ টাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হয়। আমি দেলোয়ার হোসেন সাইদী নামক একজন বিখ্যাত মুসলিম বক্তার প্রবচন নিজে বসে শুনেছি, দেখেছি। সেখানেতো নও মুসলিম হওয়ার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হত।
- জিকির পর্ব ও অর্থ সংগ্রহঃ উদ্ভট শব্দে মাথা ডানে-বায়ে ঝুঁকিয়ে, মস্তিষ্ক ফ্লুয়িডয়ের ইম্বালেন্স করে আল্লাহ্র নাম করা, আর সাথে কিছু মানুষ ব্যাগ নিয়ে আমন্ত্রিত শ্রোতাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা।
লেখকঃ Dolon-Chapa