হিন্দু জাতিকে শক্তিহীন করেছে হিন্দুর অবতারবাদ | Avatarism has made the Hindu nation powerless
হিন্দু বিশ্বাস করে যে, যখনই ধর্মের গ্লাণি হবে এবং অধর্ম বেড়ে যাবে, তখনই অবতার হিন্দুর পক্ষ অবলম্বন করে অবতীর্ণ হয়ে দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন ও ধর্ম স্থাপন করবেন। সুতরাং হিন্দুর কোনো ভয় নেই এবং হিন্দুর কিছুই করবার দরকার নাই, অবতার সব কিছু করে দেবেন।
বলা বাহুল্য, শিব, দুর্গা, কৃষ্ণ, রাম, এনারা বিভিন্ন সময়ে অবতার রুপে এসে হিন্দুকেই নিধন করেছেন। এই সকল অবতাররা বৌদ্ধযুগে এবং মুগলযুগে অবতীর্ণ হন নি। বৌদ্ধযুগে এবং মোগলযুগে হিন্দুদেরকে কচুকাটা করা হয়েছে। কিন্তু ঐ সময়ে জ্ঞানহীন কোনো অবতারই অবতীর্ণ হওয়ার দরকার বোধ করেন নি।
আসলে অবতার বলে আমরা যেমনটা বুঝছি, অবতার আসলে তেমনটা নয়। অবতার আকার বিশিষ্ট কোনো কিছুকে বলা হয় নি। অবতার সমন্ধে বৌদ্ধযুগে আমাদেরকে ভুল বুঝানো হয়েছে। গীতার 'যদা যদা হি ধর্মস্য', শ্লোকটির অনুবাদে অজ্ঞ জীবেরা লিখে রেখেছে যে, যখনই যখনই ধর্মের গ্লাণি হয় এবং অধর্ম বেড়ে যায়, তখনই আমি দেহধারন পুর্বক অবতীর্ণ হই। বলা বাহুল্য, যদা যদা হি... শ্লোকটির কোথায়ও বলা হয় নি যে, আমি দেহধারন পুর্বক অবতীর্ণ হই। অর্থাৎ যদা যদা হি.. শ্লোকটিতে এমন কোনো শব্দ উল্লেখিত হয় নি যার অর্থ আমি দেহধারন পুর্বক অবতীর্ণ হই, করা যাবে।
গীতায় আছেঃ
"যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লাণির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মনং সৃজাম্যহম্।।"
শ্লোক বিশ্লেষণঃ
যদা-- যখন
যদা-- যখন
হি -- নিশ্চয়াত্মক অব্যয়
ধর্মস্য -- ধর্মের ( যোগধর্মের)
গ্লাণির্ভবতি= গ্লাণিঃ + ভবতি
গ্লাণি -- হানি
ভবতি -- হয়
ভারত -- হে ভারত
অভ্যুত্থানমধর্মস্য = অভ্যুত্থানম্ + অধর্মস্য
অভ্যুত্থানম্ -- বৃদ্ধি
অধর্মস্য --- অধর্মের ( যোগ বহির্ভূত ধর্মই এখানে #অধর্ম শব্দ রুপে ব্যবহৃত হয়েছে)
তদাত্মনং = তদা+ আত্মনং
তদা -- তখন
আত্মনং -- নিজকে অর্থাৎ ঈশ্বরীয় স্বভাবকে
সৃজাম্যহম্ = সৃজামি + অহম্
সৃজামি -- সৃষ্টি করি
অহং -- আমি অর্থাৎ পরমাত্মা
অনুবাদঃ যখনই যোগধর্মের হানি ঘটে এবং যোগ বহির্ভূত মতবাদের বৃদ্ধি ঘটে ; হে ভারত, (যোগধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে) আমি তখন-ই আমার ঈশ্বরীয় স্বভাবকে (যোগীর আত্মার মধ্যে) সৃষ্টি (প্রকাশ) করে থাকি ; আমাকে মানুষের মতো জন্মানোর প্রয়োজন পড়ে না।
লিখেছেনঃ যোগাচার্য্য পণ্ডিত প্রণব ভট্টাচার্য্য
এই বিষয়ে আরও গবেষনা করুন ও নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করুন