আমাদের মন্দিরে আগামী সকালের আজান হোক প্রসঙ্গে | Swastika Mukherjee | Islamic secular society
আজকাল অনেকেই মন্দির থেকে আজানের ধ্বনি শুনতে চাইছেন। তাদের চাওয়ার মধ্যে অভিনবত্ব আছে। বিশেষ করে আমরা যারা বহুত্ববাদী সংস্কৃতির কথা বলি তাদের অনেকেই মন্দির থেকে আজানের ধ্বনি শুনতে পেলে খুশি হবেন। আমি জানিনা তারা আজানের অর্থ জেনে বলছেন কিনা। আজানের মূল অর্থ হল: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহই একমাত্র উপাস্য এবং মোহাম্মদ তার প্রেরিত রসুল। এসো নামাজের দিকে এসো।
এবার আসি যুক্তির কথায়ঃ
- আপনি কি সত্যিই মনে করেন আল্লাহই একমাত্র উপাস্য?
- আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নাই?
- তাহলেতো মন্দিরের সব দেব দেবীর মূর্তির বিসর্জন দিতে হবে। কাঁসর ঘন্টা ফেলে দিতে হবে। কিভাবে সেটা সম্ভব?
সেটা সম্ভব নয় বলেই মুসলিম ধর্মের কোনো লোক এরকম কথা বলেন না।আর আল্লাহই যদি একমাত্র উপাস্য হবে তবে আমাদের কাঙ্খিত বহুত্ববাদী সংস্কৃতিই বা কিভাবে থাকবে?
ইসলাম বহুত্ববাদে বিশ্বাস করে না। ভারত তথা বিশ্বে কেউ দুর্গার উপাসনা করছেন, কেউ শিবের, কেউ মনসার, কেউ শীতলার, কেউ কৃষ্ণের কেউবা পরম ব্রহ্ম এর। কেউ উপাসনা করছেন ঈশ্বরের, কেউবা প্রকৃতির। কেউ সাকারের উপাসনা করছেন কেউবা নিরাকারের। তাহলে আপনি কিভাবে বলছেন আল্লাহই একমাত্র উপাস্য? তাহলে যত মত তত পথের কি হবে? এটা তাহলে আপনি না জেনেই বলছেন।
দ্বিতীয়ত আপনি কিভাবে সাক্ষ্য দেবেন? সাক্ষ্য দেওয়ার অধিকারী কে? আদালতে কি যে কেউ সাক্ষ্য দিতে পারে? আপনি কিছুই দেখেন নি, কিছুই শুনেন নি আপনি সাক্ষ্য দিতে পারেন? আপনি কোনো কিছু না দেখে, না শুনেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন -আল্লাহ ছাড়া কেহ উপাস্য নাই। আমি জানি আপনি না বুঝেই এসব কথা বলছেন।
তৃতীয়ত আপনি একথা বলছেন না কেন মন্দির থেকে আজান ও - একই সঙ্গে মসজিদ থেকে চণ্ডীপাঠ শুনতে চান। কোনো মুসলমান ধর্মের কাউকে বলতে শুনেছেন যে সে মসজিদ থেকে চণ্ডীপাঠ শুনতে চায়। না শোনেন নি। তাহলে ব্যাপারটি কি দাঁড়ালো -মসজিদ থেকেও সাক্ষ্য দেওয়া হল আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নাই, মন্দির থেকেও সাক্ষ্য দেওয়া হল -আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো উপাস্য নাই।
- তাহলে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপাসনা করে তাদের কি হবে?
- নাস্তিকদের কি হবে?
- বহুত্ববাদী সংস্কৃতিরইবা কি হবে?
আমরা তো নিজের অজান্তেই একমুখী ইসলামিক বিশ্বের পথ তৈরী করছি।
লিখেছেনঃ ওসমান মল্লিক