আসছে ৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসম্মেলন ২০২৩
![]() |
তথ্য ছবি |
“১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রিষ্টান,মুসলিম মিলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম মূল চেতনা। আমরা কাউকে এমন সম্প্রীতি নষ্ট করার সুজোগ দিতে পারি না।”
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ঢাকায় জাতীয় হিন্দু সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
এই ইভেন্টের আগে বিভিন্ন সাংবাদিক, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের সাথে কথা বলেছে, তাকে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, তাদের আসন্ন অনুষ্ঠানের মূল বার্তা কী হবে।
জবাবে প্রামাণিক বলেন,
আমরা ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে ঢাকায় জাতীয় হিন্দু সম্মেলন করছি, যেখানে আমরা প্রধান অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বিশেষ অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্য সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা ও অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছি।
দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রাক্তন সভাপতি এবং সর্বভারতীয় বিজেপির বর্তমান সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
আমরা এই সম্মেলনে বাংলাদেশের সকল হিন্দু সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানাবো কারণ আমরা আশা করছি এই সম্মেলনে সকল সংগঠন অংশগ্রহণ করবে। আমরা জাতীয় সংসদে হিন্দুদের জন্য সংরক্ষিত আসন এবং পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থার দাবি তুলব এবং যেখানে আমরা ষাটটি সংরক্ষিত আসন চাই।
বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে বসবাস করছে। আমাদের মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা নেই। (তবে হ্যা যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের বিষয়ে মন্তব্য করবোনা।) এটি শত বছর ধরে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ঐতিহ্য। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে এ ধরনের বিভাজন প্রকট হয়ে উঠছে। ভোটকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী মহল সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এজন্য আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই। আমরা চাই হিন্দু-মুসলমানরা মিলেমিশে থাকুক, যেমন আমরা হাজার বছর ধরে এদেশে বসবাস করেছি। আমরা বাংলাদেশে আন্তঃধর্মীয় শান্তি ও সম্প্রীতি চাই। সেজন্য আমরা জাতীয় সংসদে সংখ্যাগত অনুপাতে আমাদের প্রতিনিধিত্ব চাই।
এক সময় সংসদে ৭২টি সংরক্ষিত আসন ছিল, যেটি ১৯৫৪ সালের যৌথ নির্বাচন ব্যবস্থার কারণে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। আমরা তা ফিরে পেতে চাই। বাংলাদেশের সংবিধানে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃস্থাপিত হলে বা নতুনভাবে সংযোজন করা হলে এদেশে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়বে। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় মানসিকভাবে শক্তিশালী হবে, এদেশ থেকে হিন্দুদের অন্য দেশে চলে যাওয়ার মানসিকতা থাকবে না।
অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক আরও বলেন, “১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হিন্দু-মুসলমান মিলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম মূল চেতনা। আমরা কাউকে এমন সম্প্রীতি নষ্ট করতে দিতে পারি না।”
তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানের অন্যতম স্তম্ভ ধর্মনিরপেক্ষতা। আমাদের এই চেতনাকে ধরে রাখতে হবে, যা ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য অপরিহার্য।