যশোরে তথাকথিত ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, হিন্দু স্কুলশিক্ষক বরখাস্ত
 |
| দেয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
নিউটন সরকার বলছেন যে, শিক্ষার্থীরা তার কথা পরিবর্তন করেছে।
যশোরের অভয়নগরে তথাকথিত ইসলাম ধর্মের অবমাননার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভের মধ্যে এক হিন্দু স্কুলশিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। রোবিবার দুপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম এ কথা জানান।
বরখাস্ত নিউটন সরকার অভয়নগর উপজেলার ‘দেয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের’ জীববিজ্ঞানের শিক্ষক। তার বাড়ি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, রোববার দুপুরে দেয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকাবাসী ও ইসলামী ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী স্কুলের মাঠে ওই হিন্দু শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।
অষ্টম শ্রেণির মুসলিম শিক্ষার্থীরা জানান,
গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিজ্ঞান ক্লাস নেওয়ার সময় শিক্ষক নিউটন সরকার ধর্ম ও নবী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে এটি জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে তাদের বাড়ি চলে যেতে বলেন।
2023 সালের বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের লিস্ট
বৃহস্পতিবার সরস্বতী পূজা, শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় স্কুল বন্ধ ছিল।
এলাকাবাসী জানায়,
রোববার স্কুল খোলার পর নিউটন সরকারের শাস্তির দাবিতে মুসলিম শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে অভিভাবক, এলাকাবাসী স্কুলমাঠে উপস্থিত হন।
দুপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা,
অভয়নগর থানার ওসি, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অংশগ্রহণে জরুরি সভা হয়। সভা শেষে নিউটন সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘোষণা দিলে বিক্ষোভ স্থগিত হয়।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, নিউটন সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ‘প্রমাণিত হওয়ায়’ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
“ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তবে নিউটন সরকার ধর্ম অবমাননার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“গত বুধবার অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাসে বিজ্ঞানের বাস্তবতা সম্পর্কে কথা বলেছি। দেব-দেবী ও নবীদেরকে শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাসের সঙ্গে সম্মান দেওয়ার কথা বলেছিলাম। শিক্ষার্থীরা আমার কথা পরিবর্তন করেছে। কেন বা কী কারণে তারা এমন করেছে আমি বুঝতে পারছি না।”
এছাড়া দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা বলছেন যে,
একের পর এক হিন্দুদের বিরুদ্ধে মৌলবাদী গোষ্ঠিগুলি হিন্দুদের বিরুদ্ধে স্পর্শকাতর অভিযোগ হেনে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর মানসিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। পক্ষান্তরে আমাদের দেবদেবী,ধর্ম নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,কর্মস্থল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুৎসিত মন্তব্য করছে কিন্তু একটিরো বিচার হচ্ছেনা। আপনারাই বলুন সংখ্যালঘু হয়ে কিভাবে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্ম নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারি?