মুক্তিপণ না পেয়ে অপহৃত স্কুল ছাত্রকে হত্যা, গ্রেফতার ছয় হত্যাকারী
![]() |
তথ্যচিত্র |
গত ২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার গভীর রাতে খুলনা-ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া এলাকার শেখর মণ্ডলের ছেলে নীরব মণ্ডলের (১৩) লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একই স্কুলের ৫ ছাত্রকে আটক করা হয়েছে, আটকৃতরা হচ্ছে গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সোহেল মোল্লা (১৫), হীরক রায় (১৫) ও পিতু মণ্ডল (১৪), দশম শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায় (১৫) ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মণ্ডল (১৩)। তাদের মধ্যে পিয়ালের বাড়ি ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া তেলিগাতি এলাকায় এবং অন্যদের বাড়ি গুটুদিয়া এলাকায়। এই হত্যাকান্ডের নেতৃত্ব দেন সোহেল মোল্লা।
নীরব মণ্ডল গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে তার বাবার কাছে ছেলের মুক্তিপণের জন্য ৩০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। সন্ধ্যার দিকে শেখর মণ্ডল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
নিহত নীরব মণ্ডলের বাবা শেখর মণ্ডল বলেন,
স্কুল ছুটির পর নীরব না আসায় বাসা থেকে ফোন করে আমাকে জানানো হয় ও এখনো আসেনি। এরপর ফোনে একজন নীরবের মুক্তির জন্য টাকা দাবি করে। সে পুলিশকে বিষয়টি না জানাতে বলে। আমি বলি পুলিশকে জানাব, তখন সে ফোন কেটে দেয়। বিষয়টি আমি ডুমুরিয়া থানা পুলিশকে জানাই। এমনভাবে যেন আর কোনো মা-বাবার বুক খালি না হয়।' তিনি নীরব হত্যায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।
ডুমুরিয়া থানার ওসি শেখ কনি মিয়া জানান,
গতকাল বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর পিয়াল নামে একটি ছেলে নীরবকে ডেকে নিয়ে যায়। স্কুলের পেছনে পরিত্যাক্ত একটি ভবনে মধ্যে অবস্থান করছিল মিতু, সোহেল এবং দ্বীপ। আটককৃতদের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের পরিকল্পনা ছিল নীরবকে অজ্ঞান করে তার বাবার কাছ থেকে টাকা নেওয়া। নীরবকে সেখানে আটকে রেখে তার বাবা শেখর মণ্ডলকে ফোন করে সোহেল ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় সোহেলের সঙ্গে নীরবের বাবার বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর নীরবের বাবা শেখর মণ্ডল তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ডুমুরিয়া থানায় অবগত করেন।
অপরদিকে, নীরবের বাবার সঙ্গে সোহেল মোল্লার বাগবিতণ্ডার পর আটককৃত ওই ৫ স্কুলছাত্র শ্বাসরোধে নীরবকে হত্যা করে। এরপর দড়ি দিয়ে ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
অভিযোগ পেয়ে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে গতকাল রাত ১২টার দিকে খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে সোহেল মোল্লাকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাত ১টার দিকে পরিত্যক্ত ওই বাড়ি থেকে নীরবের মরদেহ উদ্ধার করে।
হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সোহেল মোল্লা জানায়, ক্রাইম পেট্রোল দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা আয়ের উদ্দেশে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেছিল ওই ৫ স্কুলছাত্র। সে অনুযায়ী নীরবকে আটকে রেখে তার বাবার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে বলে তারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
সোর্সঃ JamunaTV, ProthomAlo, HTPC