Translate

ইলিয়াস-পিনাকী চক্র যেভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে

ইলিয়াস-পিনাকী চক্র যেভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে

কলমেঃ কৃত্তিবাস কাশীরাম। 

ইলিয়াস-পিনাকী চক্র বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে উদ্ভট অবাস্তব সব অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে! ভারত সরকার বাংলাদেশের হিন্দুদের মদত দেওয়া তো দূরের কথা, অদ‍্যবধি বাংলাদেশী হিন্দুদের একটি পয়সা সাহায্য দেয়নি।


ইলিয়াস-পিনাকীরা বিজেপিকে হিন্দুত্ববাদী দল বলে প্রচার চালাচ্ছে; অথচ বিজেপি একটি স্বীকৃত ধর্মনিরপেক্ষ দল। বিজেপির গঠনতন্ত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা পরিষ্কারভাবে লেখা রয়েছে। এবং ক্ষমতায় এসে বিজেপি কীভাবে নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছে - তার একটি দৃষ্টান্ত দিচ্ছি: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সবার চেয়ে বেশি সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে বিজেপি সরকার। যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করতে না পেরে, একসঙ্গে ৮৪ জন হিন্দুকে গলা কেটে হত্যা করেছিল। মিয়ানমার সরকার সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু করলে- রোহিঙ্গারা গৃহযুদ্ধ শুরু করে। বাংলাদেশে পালিয়ে এসে পর্যন্ত এই রোহিঙ্গারা হিন্দুদের হত্যা করেছে।


নরেন্দ্র মোদি কিংবা বিজেপি আরএসএস মুসলমানদের কোন অত্যাচার করেনি বরং মাথায় তুলে জামাই আদরে রেখেছে। তা সত্ত্বেও ইলিয়াস-পিনাকী চক্র অবিশ্বাস্য সব কল্পকাহিনী প্রচার করে চলেছে। যে কাশ্মীর নিয়ে ইলিয়াস-পিনাকীরা এত শত মিথ্যা কথা বলছে , সেই কাশ্মীরে যে ক'জন হি*ন্দু অবশিষ্ট ছিল, তারাও এই নরেন্দ্র মোদির আমলে কাশ্মীর ছেড়ে পালিয়ে এসে প্রাণ রক্ষা করেছে। নরেন্দ্র মোদি সরকার একজন কাশ্মীরী-হিন্দুকেও কাশ্মীর ভ্যালিতে পুসব‍্যাক করতে পারেনি। তাহলে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে কেন?


ইলিয়াস-পিনাকী গং চেয়ে চেয়ে দেখছে, চীন সরকার কিভাবে সেখানকার মুসলমানদের বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিয়েছে। ভারত ও চীনে একসময় সমান সংখ্যক মুসলমান ছিল। ভারতে এখন মুসলমানের সংখ্যা ২১ কোটি, চীনে মাত্র ১ কোটি ৭০ লাখ। চীন সরকার জিংজিয়াং-এ দাড়ি টুপি রোজা নামাজ বোরখা হিজাব ইত্যাদি নিষিদ্ধ করে রেখেছে। মসজিদ ভেঙে পাবলিক টয়লেট বানিয়েছে। ইলিয়াস-পিনাকীরা কিন্তু চীনের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করতে সাহস পায় না। কেননা ইলিয়াস-পিনাকীদের বাপের দেশ পাকি*স্তানের প্রভু হচ্ছে এই চীন।


পাকিস্তান চীনকে বন্ধু দেশ দাবি করে লাফাচ্ছে। ওদিকে চীন কিন্তু ঋণের ফাঁদে ফেলে- পাকিস্তানকে ফকির বানিয়ে পথে বসিয়ে দিয়েছে। ইলিয়াস-পিনাকীরা চীনের বিরুদ্ধে একটি কথা বলে দেখুক দেখি। পাবলিক খাবেনা। চীন বাংলাদেশকেও সাইজ করে ফেলেছে, বোকা পাবলিকের সেটা বুঝতে সময় লাগবে।


চীনের অর্থনৈতিক আগ্রাসনে দেউলিয়া হয়ে গেছে  শ্রীলঙ্কা। পূর্ব পাকিস্তানের পর পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম হিন্দু গণহত্যা চালিয়েছিল এই শ্রীলঙ্কা। ভারত অবশ্য হিন্দু গণহত্যা বলে না; পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দু গণহত্যাকে যেমন বাঙালি গণহত্যা বলে, ঠিক সেভাবেই শ্রীলঙ্কার হিন্দু গণহত্যাকে তামিল গণহত্যা বলে ভারত। এবং শ্রীলঙ্কার হিন্দুদের খতম করতে রাজীব গান্ধীর সরকার সৈন্য পাঠিয়েছিল। এখন আবার নরেন্দ্র মোদির সরকার দেউলিয়া শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা নরেন্দ্র মোদিকে কৃতজ্ঞতা জানাতে - চীনের যুদ্ধ জাহাজকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। চীনের অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ হাম্মানতোতা বন্দরে বসে বসে ভারতের উপর নজরদারি চালাচ্ছে। এদিকে ইলিয়াস-পিনাকীরা গর্ব করে প্রচার চালাচ্ছে, শ্রীলঙ্কা দেখিয়ে দিয়েছে ভারতকে কিভাবে শিক্ষা দিতে হয়, আর কিভাবে হিন্দুদের মারতে হয়।


আফগানিস্তান তালেবান

ইলিয়াস-পিনাকী চক্র আসলে ভারতের বোকামি দেখে মজা লুটছে। যেমন ধরুন, আফগানিস্তানে তালেবানরা একজন হিন্দুকেও জীবিত রাখেনি। সেই আফগানিস্তানকে নরেন্দ্র মোদির সরকার যখন সাহায্য দেয়, আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম। বাংলাদেশের বিজেপি-পন্থী ব্লগাররা আমার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলল, "হিন্দু হৃদয়সম্রাট নরেন্দ্র মোদির কূটনীতি বোঝার ক্ষমতা তোর নেই।" দেখলাম কূটনীতি! আফগানিস্তান তাদের খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের একচেটিয়া অনুমোদন দিয়েছে চীনকে; আর ভারতকে বলেছে রাস্তা মাপতে।


কট্টর মুসলিম কান্ট্রি তুরস্ক

কিছুদিন আগে তুরস্কে ভূমিকম্প হলো। সঙ্গে সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সরকার তুরস্কে সাহায্য টিম পাঠালো। এই তুরস্কের মানুষ, ভারত দখল করে যত হিন্দু হত্যা করেছে, সেটা অন্যান্য সমস্ত দখলদার মিলেও করেনি। তুর্কিরা হিন্দু পুরুষদের পুরুষাঙ্গ কর্তন করে, ক্রীতদাস হিসাবে বিদেশে রপ্তানি করত; আর হিন্দু নারীদের রপ্তানি করত যৌনদাসী হিসেবে। বাংলাদেশের বিজেপি-পন্থী ব্লগাররা সেই ইতিহাস জানে কিনা জানিনা। যদি জানত, তাহলে নিম্নাঙ্গের কাপড় মস্তকে বেঁধে এভাবে নাচানাচি করতো না!


মোদি সরকারের পাঠানো উদ্ধারকারী টিম ফেরত আসতে না আসতেই, তুরস্কের এরদোগান প্রশাসন কাশ্মীর ইসুতে ভারতের টুঁটি চেপে ধরেছে। এদিকে ইলিয়াস-পিনাকী গং তাদের দ্বিতীয় বাপ এরদোগানের বীরত্ব নিয়ে গলা ফাটাচ্ছে!


আমি সব সময় বলি, ভারতের উচিত চীনের মতো বুদ্ধিমান হওয়া। এজন্য বাংলাদেশের বিজেপি-পন্থী ব্লগাররা আমাকে বামপন্থী ট‍্যাগ লাগিয়ে দিতে চেষ্টা করে। আরে আমি বামপন্থী হতে যাব কোন দুঃখে! সোভিয়েত ইউনিয়ন জীবিত থাকাকালীন সময় থেকে আমি আমেরিকা-পন্থী। তবে পাশ্চাত্যের উচিত চীনের আবিষ্কৃত শান্তির ভ্যাকসিনটা আমদানি করা। তাহলে ফ্রান্স-আমেরিকায় বসে ইলিয়াস-পিনাকী গং এভাবে মুক্তকন্ঠে জ*ঙ্গিবাদ প্রচার করতে পারত না।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

আপনাদের ক্লিক এই Website টি সচল রাখার অর্থ যোগাবে।