Translate

Bangladesh News: চাঁদা দিতে না পারলে মন্দিরের পূজা বন্ধ রেখে বাড়িঘর ছেড়ে ভারতে চলে যেতে হবে

চাঁদা দিতে না পারলে মন্দিরের পূজা বন্ধ রেখে বাড়িঘর ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বলেন

গত ৬ মার্চ সোমবার নারায়ণগঞ্জ-রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন শাখা হিন্দু মহাজোটের সভাপতি মানিক দত্তেকে মারধর করে বাড়িতে হামলা ও চাঁদা দাবি করেছে, চাঁদা দিতে না পারলে মন্দিরের পূজা বন্ধ রেখে বাড়িঘর ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বলেন।


বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী মানিক দত্ত বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন। 


মামলার আসামিরা হলেন,

১. কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বরুনা এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম (৩৮),

২. মো. রিপন সাউদ (৩২),

৩. মো. রুবেল (২২),

৪. মো. রায়হান (২৫) ও

৫. মো. আল আমিন।

এছাড়া আরও ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। 


রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন,

বৃহস্পতিবার রাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সরেজমিনে তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। 


ভুক্তভোগী মানিক দত্ত নারায়ণগঞ্জ-রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন হিন্দু মহাজোটের সভাপতি। ইউনিয়নের বরুনা এলাকায় পূর্বপুরুষের ভিটায় পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। 


মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়,

প্রায় ৬ একর ৮০ শতাংশ জমির উপর কয়েক পুরুষ ধরে তাদের বসবাস। ওই জমিতে শতবর্ষ পুরোনো একটি মন্দির ও পারিবারিক শ্মশান রয়েছে। সম্প্রতি তারা ওই মন্দির ও শ্মশানের সংস্কার কাজ শুরু করেন। একইসাথে নিরাপত্তার খাতিরে বাড়ির চারদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এতে আসামিরা গত ৬ মার্চ সোমবার মানিক দত্তদের বাড়িতে গিয়ে অনুমতি ছাড়া সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কেন করেছে জানতে চেয়ে হুমকি-ধমকি দেয়।


একই সঙ্গে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা দিতে না পারলে মন্দিরে পূজা বন্ধ রেখে বাড়িঘর ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বলেন। আসামিদের হুমকি-ধমকির প্রতিবাদ করায় মানিক দত্তকে মারধর করে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।


এই সময় হামলাকারীরা রাম দা ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে বাড়ির লোকজনকে ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। পরে হামলাকারীরা মন্দিরের দেয়াল, সীমানা প্রাচীর, ঘরের টিনের বেড়া, পানির লাইন ও গাছগাছালি কুপিয়ে কেটে ফেলে। দড়জা ভেঙে ঘর থেকে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।


হিন্দু মহাজোটের সভাপতি মানিক দত্ত বলেন,

১৯৬৪ সালের দাঙ্গায় তাদের পরিবারের চারজন সদস্য মারা যান। একাত্তর সালেও তাদের বাড়িঘরে হামলা হয়। তবুও দেশ ছেড়ে যাননি। 


“এখন আবার আমাদের পিতৃভিটা দখলের চেষ্টা করছে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আশা করি রাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা দেবে।” 


নাম প্রকাশ না করার শর্তে দত্ত পরিবারের এক সদস্য বলেন,

কায়েতপাড়ার বিভিন্ন গ্রাম আবাসন কোম্পানির দখলে চলে গেছে। দেশের একটি প্রভাবশালী আবাসন কোম্পানি একরের পর এক জমি দখলে নিচ্ছে।

আসামিরা ওই আবাসন কোম্পানির পক্ষে কাজ করেন।

“তারা আমাদের জমিও দখলে নিতে চায়। এই কারণেই আমরা বাড়ির চারদিকে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম।” 


স্থানীয়রা জানান,

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী আদিত্য দত্ত এই পরিবারের সন্তান। তাদের ‘দত্ত বাড়ি’ এলাকায় পরিচিত নাম। ১৯৬৪ সালের দাঙ্গা ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই পরিবার হামলা ও লুটপাটের শিকার হন। তাদের বাড়ির ‘মা মৃত্যু নাশিনী মন্দিরটি’ ১২৪ বছরের পুরোনো। 


হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে মামলার আসামি শফিকুল ও আল-আমিনের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।


https://www.facebook.com/102576179155167/posts/pfbid02BY9MVF9N1Z2gXUun8QKTsuUQWHtL5gesVxL96HtzndwCxAh45nYfVns2Lkrg7hgSl/?mibextid=Nif5oz

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

আপনাদের ক্লিক এই Website টি সচল রাখার অর্থ যোগাবে।